খাঁটি মধু চেনার ৭ টি উপায়
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চেষ্টা করেছি মধু চেনার ৭টি উপায় ও খাঁটি
মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেলটি
মন দিয়ে পড়েন তাহলে খাটি মধুর চেনা আপনার কাছে খুব সহজ হয়ে যাবে।
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টটি খাঁটি মধু ৭ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি এই
আর্টিকেলে আপনার মধু বিষয়ে আরো ক্লিয়ার ধারণা হয়ে যাবে এই পোস্টটি মনোযোগ
সহকারে পড়লে। আপনি মধু কিনতে যে ঠকবেন না । চলুন এই পোস্টটি শুরু করা যাক
ভূমিকাঃ
প্রিয় পাঠক আপনি যদি খাঁটি মধু চেনার জন্য চিন্তিত তাহলে এই পোস্টটি আপনার
জন্য। আমরাই পোস্টে চেষ্টা করেছি খাঁটি মধু চিনার সাতটি উপায়। আরো অনেক তথ্য
এই পোস্টের দেওয়া রয়েছে আপনি যদি এই পোস্টটির মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে
আপনার দৈনিক জীবনে মধু কিনতে গিয়ে ঠকবেন না। এবং আপনার পরিবারকে একটি
রাসায়নিক দ্রব্য মুক্ত মধু দিতে পারবেন।
আসল মধু কি জমে?
আসল মধু কি জমে? আপনি যদি খাঁটি মধু চিনতে চান তাহলে আপনাকে একটি বিষয়ে
ধারণা নিতে হবে সেটি হচ্ছে আপনার মধুটি ফ্রিজে রাখলে যদি জমে তাহলে মধুটি কি
আসলকি না এর উত্তরটি হবে না। কারণ খাঁটি মধু ফ্রিজে রাখলে কখনোই জমাট বাঁধবে না
বা দানা দানাভাব হবে না। শুধুমাত্র মধুর ঘন তরল ভাবটাই থাকবে।
আরো পড়ুনঃ
দুধ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কিন্তু ভেজায় যুক্ত মধু ফ্রিজে রাখলে সেই মধুটি জমে যাবে এবং দানা দানাভাব
থাকবে এবং মধুর উপরে অংশগুলো সাদা সাদা দেখা দেবে যা আসলেই চিনি।
চুন দিয়ে মধু পরীক্ষা
আপনার মধুটি খাঁটি মধু নাকি ভেজালযুক্ত মধু। এটি জানতে চুন দিয়ে মধু পরীক্ষা টি
করতে পারেন। চুনের মাধ্যমে মধু পরীক্ষা করতে হলে প্রথমে আপনাকে আপনার হাতের
তালুতে একটু চুন নিয়ে তারপর আপনার সেই মধুটি ওই চুনের সাথে মিশ্রিত করে আঙ্গুল
দিয়ে একটু নাড়া দিন। এবং ঘর্ষণের ফলে যদি আপনার হাতে তালুটি গরম হয়ে যায় তবে
আপনি বুঝবেন আপনার মধুটি খাঁটি মধু।
আর আপনার চুনের সাথে মিশিত্র মধুটি হাতের আঙ্গুল দিয়ে নাড়া দেওয়ার
পরে যদি দেখেন হাতের তালটি গরম হচ্ছে না তারমানে আপনার এই মধুটি ভেজাল যুক্ত মধু।
মধু পরীক্ষা করার যন্ত্র
মধু পরীক্ষা করার যন্ত্র টির নাম নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোস্যান্স। আপনার
মধুটি আপনি এন এম আর (নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোস্যান্স) টেস্ট এটির মাধ্যমে
মধু স্ক্যানিং, ভেজাল পরিচালনা করা যায়। এটি হলো একটি উন্নত সার্বিক পরীক্ষার
প্যারামিটার।
জার্মানির ইন্টারটেক ল্যাবরেটরী বেশিরভাগই মধু বিশুদ্ধতা বিশ্লেষণের জন্য এই
যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়। এটির মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি আপনার মধুর টি কি খাঁটি
না ভেজালযুক্ত এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
খাঁটি মধুর বৈশিষ্ট্য
খাটি মধু চেনার অনেক উপায় আছে। কিন্তু তার আগে খাঁটি মধুর বৈশিষ্ট্য জানা খুবই
দরকার আপনি যদি মোদি বৈশিষ্ট্য খুঁজতে চাচ্ছেন তাহলে আপনার সর্বপ্রথম দেখতে হবে।
মধু টি ফেনা বা বুদবুদের মতো দেখাচ্ছে কিনা যদি তা দেখায় তাহলে এটি কাঁচা খাঁটি
মধু। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে এই মধুতে কোন রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো আছে কিনা।
যদি আপনি দেখেন যে গাঁজা খাটি মুহূর্তের সাদা বুদবুদের মতন দেখা গিয়েছে তাহলে
বুঝবেন এই মধুতে কোন ক্ষতিকারক কোন রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়নি। এবং খাঁটি মধু
কিনতে হলে আপনাকে আপনার হাতের কাছে থাকা একটি একটি ম্যাচের কাঠি মধুটিতে ডুবিয়ে
আগুন ধরালে যদি সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে তাহলে মধ্যটি আসল।
এবং যদি মধুতে ম্যাচের কাঠি ডুবানোর পর সে ম্যাচের কাঠিতে আগুন না ধরলে মধুটা
তাহলে নকল বুঝবেন।
সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায়
সরিষা ফুলের মধু চেনার উপায় এর মধ্যে অনেক উপায় আছে কিন্তু তার আগে মধুর
বৈশিষ্ট্য দেখে আপনি বুঝবেন এই মধু আসল কিনা। সরিষা ফুলের মধু টাটকা থাকার সময়
দেখতে সাধারণত extra lite Amber রঙের মতন হয়। আবার সরিষা ফুলের জমা মধু অনেকের
কাছে খুবই পছন্দ কিন্তু কারো কাছে আবার অপছন্দের।
সরিষা ফুলের মধুর একটি ঘ্রাণ আছে তা সরিষার ফুলের ঘ্রান নিলে যে রকম মধুরও তেমন
এই একই ঘ্রাণ। সরিষা ফুলের মধুতে ঘনত্ব কম বা বেশি হতে পারে। এবং সরিষা ফুলের
মধু যদি পাতলা হয় তাহলে তাতে ফেনার মতন দেখা দেয়।
সুন্দরবনের খাঁটি মধুর ৮টি বৈশিষ্ট্য
খাঁটি মধু চেনার জন্য আপনার সব থেকে সঠিক উপায় হল মধুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে
জানা। সুন্দরবনের খাঁটি মধু চেনার জন্য নিচে সুন্দরবনের খাঁটি মধুর ৮টি
বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো আশা করি আপনারা এ বৈশিষ্ট্য পড়ে সুন্দরবনের খাঁটি মধু
সম্পর্কে জানতে পারবে।
- সুন্দরবনের মধু খেতে খুব সুস্বাদু এবং কিছুটা টক মিষ্টি লাগে।
- এ মধু দেখতে সাধারনত লাইট অ্যাম্বার কালার হয় কিন্তু কিছু সময় ফুল ভেদে কিছুটা ডার্ক হতে পারে।
- সুন্দরবনের মধু কিছু মানুষের মুখে কুসর বা আখের রসের মতো লাগে।
- সুন্দরবনের খাঁটি মধু চিনার জন্য সবথেকে অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মধুতে একটু ঝাকি লাগলেই সে মধুর উপরে প্রচুর পরিমাণ ফেনা জমে ওঠে।
- সুন্দরবনের মধু সব সময় পাতলা হয়।
- সুন্দরবনের মধু কখনো জমে না হোক সেটা ফ্রিজে বা বাইরে।
- সুন্দরবনের মধু চেনার আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে হাতে চাক কাটার পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা মধুর ওপর হলদা রঙের পোলেন জমা থাকে।
-
খাঁটি মধুর চেনার জন্য আপনাকে প্রথমে একটি গ্লাসের মধ্যে কয়েকফোঁটা মধু
দিয়ে দিতে হবে। তারপর সেই গ্লাসে পানি দিতে হবে পানি দেয়ার পর মধুর পানির
সঙ্গে মিশে গেলে নিশ্চিত হবেন সেটি ভেজাল মধু। আর মধু যদি গ্লাসের পানিতে
ছড়িয়ে যায়। তাহলে আপনি বুঝবেন সেটি আসল এবং ভেজালমুক্ত ম।
আপনি যদি কখনো সুন্দরবনের মধু ক্রয় করেন তাহলে ক্রয় করার সময় এই সাতটি
বৈশিষ্ট্য প্রয়োগ করে দেখে আপনি বুঝতে পারবেন ওই মধুটি কি সুন্দরবনের মধু। সাতটি
বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে জানতে পারবেন কিনবেন বা কিনেছেন ওই মধুটি কি সুন্দরবনের
খাঁটি মধু নাকি ভেজালযুক্ত মধু।
নষ্ট মধু চেনার উপায়
আপনি কিভাবে চিনবেন যে মধুটি নষ্ট না ভালো তাহলে আপনাকে এই কয়েকটি নষ্ট মধু
চেনার উপায় অবলম্বন করতে হবে । তাহলে চলুন বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মধু নষ্ট হতে
পারে যেমন মৌমাছির হজন যন্ত্র দূষণের কারণে কিংবা ফুলের চারপাশের পরিবেশের কারণে
মধু নষ্ট হয়ে থাকে। ভিনেগারের সাথে মধু মিশিয়ে খুব সহজেই মধুর মান নির্ণয় করা
যেতে পারে।
ভিনেগার গোলানো পানিতে কয়েক ফোঁটা মধু দিয়ে তারপর একসাথে মেশাতে হবে যদি
মিশ্রণের ফেনা দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে সেটি ভালোমতো না।আবার আপনি যে পটে বা
বয়ামে সংরক্ষণ করেন সেটি যদি নোংরা বা অসাস্থ্যকর হয় তাহলে তা সংস্পর্শে মধু
এসে সেটা নষ্ট হতে পারে।
আবার অনেক সময় মৌমাছি পরাগায়নের সময় যখন ফুলের উপর বসে তারপর মধু আহরণ করে তখন
ওই গাছের যদি কোন বিষাক্ত পদার্থ সে গ্রহণ করে তাহলে সে মধুটি নষ্ট হতে পারে।
লেখ লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় পাঠক আপনি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন যে আজকের পোস্টটি ভিতরে
আলোচনা করা হলো মধু চেনার সাতটি উপায় এর সম্পর্ক। আজকের এই পোস্টটি পড়ার পর
আপনার কাছে কেমন লাগলো আপনার মূল্যবান কমেন্টটি আমাদেরকে অবশ্যই
জাানাবেন।
আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি এই পোস্টটি আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করে দিন।আল্লাহ হাফেজ।
কুইক ফাইন লাইন এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url