ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে ২০২৪
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের এই পোস্টে আপনারা জানতে পারবেন ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে ২০২৪ এবং ভিসা সম্পর্কে আরো নানা তথ্য। প্রিয় পাঠক আপনারা যদি এ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি পুরোপুরি পড়ুন আশা করি আমাদের এই পোস্টটি করে আপনার ভালো লাগবে।
প্রিয় পাঠক আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে এ সম্পর্কে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি আশা করি আপনারা আমাদের এই পোষ্টটি পুরোপুরি পড়বেন। আমাদের এই পুরো আশা করি এ সম্পর্কে ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে যাবেন। চলুন বিস্তারিত জানা যাক।
ভিসা কি
ভিসা কি। ভিসা হল একটি দেশ থেকে অন্য একটি দেশে প্রবেশ করার অনুমতি পত্র। ভিসা ছাড়া আপনি কোন ভিন দেশে প্রবেশ বা অবস্থান করতে পারবেন না। এটাকে আপনার অবৈধ অভিবাসন হিসেবে গর্নিত করা হবে এবং এটি মূলত একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভিসা মূলত পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পারমিটের কোন একটি একটি স্টামবা স্টিকার লাগিয়ে ভিসা প্রদান করে।
এবং অনেক দেশ ইমেইলের মাধ্যমে ও ভিসা দিয়ে যাকে ই ভিসা থাকে বলা হয়। ভিসাতে সাধারণত আবেদনকারীর নানা রকম তথ্য থাকে যেমন আবেদনকারীর নাম, বয়স , লিঙ্গ, জাতীয়তা এবং পাসপোর্ট নাম্বার আরো ইত্যাদি তথ্য লাগে। সহজ ভাবে বোঝাতে গেলে ভিসা হল একটি ভিন দেশে প্রবেশ করার জন্য যে প্রবেশপত্রটি লাগে তাকে মূলত ভিসা বলা হয়।
আপনি যদি কোন দেশে অবস্থান করতে চান তাহলে তার আগেই আপনার কে একটি ভিসা তৈরি করতে হবে।
ভিসা কত প্রকার ও কি কি
আমাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে ভিসা কত প্রকার ও কি কি এ প্রশ্নের উত্তর হল ভিসা। সাধারণত ভিসা অনেক রকম রয়েছে তার মধ্যে কিছু ভিসা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
- ভিজিট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- মেডিকেল ভিসা
আরও ইত্যাদি ভিসা রয়েছে এগুলোই মূলত বেশিরভাগ ব্যবহার করা হয়। এই ভিসা সম্পর্কে আরো নানা তথ্য নিচে দেওয়া হল
ভিজিট ভিসা : ভিজিট ভিসা মূলত কোন দেশের ব্যবসায়িক মিটিং, অথবা আপনার আত্মীয়-স্বজনের কাছে অথবা আপনার স্বামী বা বউ বাচ্চার কাছে এবং চিকিৎসা ইত্যাদি যাওয়ায় বিভিন্ন কারণে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অথবা ওই দেশের কারো সঙ্গে বিবাহ করেছেন এবং তার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন এটাই মূলত ভিজিট ভিসা।
আপনি যদি ইংল্যান্ড যান তাহলে তারা এই ভিসা কে বলে ভিজিট ভিসা আবার আপনি যদি এই ভিসার জন্য আমেরিকাতে আবেদন করে থাকেন তাহলে তারা এ বিষয়টাকে বলে ভিজিটর ভিসা এবং আপনি যদি একই কাজে ইন্ডিয়াতে আবেদন করেন তাহলে তারা এ ভিসাকে এন্টি ভিসা বলে থাকে। আপনারা যদি ভারতে কেউ থেকে থাকে অথবা আপনার সন্তান বা বউ-বাচ্চা থেকে থাকে তাহলে এর ক্ষেত্রে আপনি এই ভিজিট ভিসার মাধ্যমে ভারতে যেতে পারেন।
ভারত মূলত তিন ধরনের এই এনট্রি ভিসা দিয়ে থাকে। একটি হলো সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা। আপনাকে যদি সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হয় তাহলে আপনি ভারতে গিয়ে মোট ৯০ দিন বা তিন মাস থাকতে পারবেন। যদি আপনাকে আবার ডাবল এন্ট্রি ভিসা দেওয়া হয় তাহলে আপনি ভারতে গিয়ে ছয় মাস অথবা একবার গিয়ে 90 দিন এবং দ্বিতীয়বার গিয়ে 90 দিন থেকে আসতে পারেন।
আবার যদি আপনাকে ওরা মাল্টিপল ভিসা দেয় তাহলে আপনি ৯০ দিন করে ঘুরে আসতে পারবেন। এবং এই ভিসাটির মেয়াদ থাকতে পারে এক বছর পর্যন্ত। আবার এই দিকে যদি আপনি লন্ডনের ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করেন সেক্ষেত্রে এরকমই সিঙ্গেল,, ডাবল সিঙ্গেল এবং মাল্টিপল ভিসা দিবে।
টুরিস্ট ভিসা : ভারতে মূলত তিন টুরিস্ট ভিসা বা ভ্রমণ ধরনের ভিসা দিয়ে থাকে । এই বিষয়ের মাধ্যমে আপনারা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে। স সংক্ষিপ্ত শুরপ আপনি হয়তো ইন্ডিয়ার কাশ্মীরে ঘুরতে যাবে ভাব ভ্রমন করতে যাবেন এর জন্য আপনাকে টুরিস্ট ভিসা করতে হবে নইলে আপনি যেতে পারবেন না। সহজ ভাবে বলতে গেলে কোন একটি ভিন দেশে আপনি কোন স্থানে ভ্রমণ করতে যাবেন ও সে দেশের দর্শনীয় স্থানে যাবেন। সেক্ষেত্রে আপনার টুরিস্ট ভিসার দরকার পড়বে।
স্টুডেন্ট ভিসা : স্টুডেন্ট ভিসা মূলত দরকার পড়ে স্টুডেন্টদের জন্যG যারা দেশের বাইরে ভালো একটি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার জন্য বিদেশে যায় তাদের এই স্টুডেন্ট ভিসার দরকার পড়বে। স্টুডেন্ট ভিসা নিতে হলে অনেক দেশে IELTS এর দরকার পড়তে পারে এবং অনেক দেশে আবার নাও করতে পারে।
আমরা অনেকে আছি যাদের ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল বাইরের কোন ভালো দেশে ভালো মানের পড়াশুনা ও শিক্ষা গ্রহণ করা। যদি এরকম ইচ্ছা বা শখ থাকে তাহলে আপনি স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে পারবেন।
বিজনেস ভিসা : আমাদের দেশের অনেক ব্যবসায়ীরা রয়েছে যারা বিদেশে বা ইন্ডিয়াতে তাদের সে ব্যবসার জনো যায়। যদি আপনি কোন ব্যবসায়ী ক্ষেত্রে বা সেই দেশে কোন পণ্য বিক্রি করতে যান তাহলে আপনার এই বিজনেস ভিসার দরকার পড়বে। তবে এটির মাধ্যমে কোন ছোটখাটো ব্যবসা অথবা রানের ব্যবসা অথবা ভারতে চাকরির আশায় কোন কাজ করবে না।
মেডিকেল ভিসা : মেডিকেল ভিসা ব্যবহার হয় আপনার যদি কোন রোগী থাকে এবং আপনি সেই রোগীর পরিচালক হিসেবে আসতে চান সে কারণে আপনার মেডিকেল ভিসা ব্যবহার করতে পারবেন। এদিকে একটি মেডিকেল পরিচারক ভিসা বলা হয়ে থাকে।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করার জন্য কি কি লাগবে
আপনাদের অনেকেরই মনে প্রশ্ন আসতে পারে ইন্ডিয়ান পুলিশ ভিসা করার জন্য কি কি লাগবে। আপনি যখন ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করার জন্য ভিসা অফিসে যাবেন তখন অবশ্যই আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র নিয়ে যেতে হবে । ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করার জন্য কি কি লাগবে সেগুলো নিচে দেওয়া হল:
- টুরিস্ট ভিসার আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ করতে হবে
- পুলিশ ভিসার আবেদনের ছবি লাগাতে হবে
- জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নিয়ে যাবে
- আপনার পাসপোর্ট এর আসল কপি অথবা ফটোকপি নিয়ে যাবেন
- আপনার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কার্ড নিয়ে যাবেন
- সঠিকভাবে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি নিয়ে যাবেন এবং (উক্ত ছবিটি যেন আগের কোন বিষয় ব্যবহার না করা হয় এরকম ছবি নিয়ে যাবেন)
- তিন মাসের ব্যাংক সেন্টমেন্ট নিয়ে যাবেন
- আপনার বাসার তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল এবং গ্যাসবিলের ফটোকপি নিয়ে যাবেন
- আগে যদি কোন সময় ইন্ডিয়া গিয়ে থাকেন সেই ভিসার এর ফটোকপি নিয়ে যাবেন
- আপনি যে পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন সে পাসপোর্ট এর কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্স/এন ও সি/স্টুডেন্ট আইডি কার্ড এগুলোর ফটোকপি নিয়ে যাবেন
- যদি আপনার আগের কোন পুরনো পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে সেই পাসপোর্টটি নিয়ে যাবেন।
টুরিস্ট ভিসা করতে খরচ কত পড়বে
প্রত্যেকটি ভিসার আলাদা আলাদা ফ্রি নির্ধারণ করা থাকে। যারা ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে চাচ্ছেন তাদের মূলত ৯০০ টাকা ফ্রি প্রদান করতে হবে। আপনি যদি দালাল কৃতক ভিসার দন করেন তাহলে হয়তো বেশ কিছু টাকা দিতে হতে পারে।
ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন
আপনার অনেকেই আছেন যারা জানতে চান ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ কতদিন। ইন্ডিয়ান ভিসা অফিস জানিয়েছে যে নতুন টুরিস্ট ভিসার মেয়াদ ছয় মাস করা হয়েছে। অর্থাৎ আপনারা যারা ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা ভিসা করবেন তাদের সেই ভিসার মেয়াদ থাকবে মাত্র ৬ মাস।
ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে ২০২৪
আমরা অনেকে আছি যারা জানতে চাই ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে ২০২৪। ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে তা সম্পর্কে নিচে দেওয়া হলো :
- আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ছয় মাসের থাকতে হবে
- আপনার পাসপোর্টে অন্তত দুটি সাদা পেজ থাকতে হবে
- আপনার যদি আগের কোন পাসপোর্ট থাকে তাহলে আবেদন করার সময় সেটিও লাগবে
- একটি শব্দ ছবি তোলা লাগবে(যে ছবি তিন মাসের বেশি পুরনো নয়) ছবিটির সাইজ হবে ২x২ (৩৫০x৩৫০) পিক্সেল। এবং ছবিটি হবে রঙিন যেন আবেদনকারীর পুরো মুখমণ্ডলটি দেখা যায় এবং ছবির পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড টি হবে সাদা।
- তিন মাসের বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল এবং গ্যাসের বিলের কাগজ বা ফটোকপি লাগবে।
- পেশার প্রমাণপত্র লাগবে। চাকরি দাদার কাছ থেকে সনদ পদ্ধতি নিতে হবে। শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে সনদপত্র অথবা। আইডি কার্ড লাগবে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাক্তির অবসরপ্রাপ্ত কাগজ লাগবে। বিশেষ ব্যক্তির জন্য বাণিজ্যিক সনদপত্র লাগবে।
- তিন মাসের ব্যাংক সেন্টমেন্ট লাগবে অথবা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড এর অনুলিপি লাগবে।
- আবেদনকারীর অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম এর দেওয়া নির্ধারিত স্থানে তাদের ছবি স্ক্যান করে আপলোড করে রাখতে হবে।
- আবেদনকারী কে এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে যে তার পাসপোর্টে এবং জন্মস্থান এর পুরনো পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্র এবং অথবা জন্ম সনদের সঙ্গে তার তথ্যের মিল থাকতে হবে।
- অবশ্যই পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে আবেদন করার সময় তার জমা দিতে হবে।
- বাংলাদেশী পাসপোর্ট ধারীদের ক্ষেত্রে সব ধরনের ভারতীয় ভিসা এপয়েন্টমেন্ট এর তারিখ এবং সময় ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়।
- আবেদনপত্র অবশ্যই ১০ দিনের মধ্যেই জমা দিতে হবে।
প্রিয় পাঠক এতক্ষণে নিশ্চয় জানতে পেরেছেন যে ইন্ডিয়ান ভিসা করতে কি কি লাগে। আপনি যদি ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাদের এই কাগজপত্র গুলো লাগবে এবং নিয়মাবলী গুলো মেনে চলতে হবে।
লেখকের মন্তব্য : ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে কি কি লাগে ২০২৪
প্রিয়া পাঠক এতক্ষণে নিশ্চয়ই আমাদের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা এ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। প্রিয় পাঠক আমাদের এ পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার মূল্যবান মতামতে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানিয়ে দিবেন এবং যারা ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করতে চাই এমন বন্ধু-বান্ধবদের মাঝে আমাদের এই পোস্টটি শেয়ার করুন আজ আর নয় আমাদের এই পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
কুইক ফাইন লাইন এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url